পাড়ের ধারে রাখা ইতিহাস
খাঁটি সোনার তৈরী পুকুরের কাহিনী, ১৯০৭ সালের গেজেটিয়ার বাদ দিলে ইতিহাসের অন্য কোন ইংরেজী বইয়ে পাওয়া যায় না l কিন্তু পুকুরের এই কাহিনী মধ্যপ্রদেশের রিবা, সতনা, জব্বলপুর ও মণ্ডলা জেলায় গ্রামে গ্রামে শোনা যায় l
শ্রী ভূপতি সিংহ-এর লেখা বই, ‘পাটন তহসিলের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস’-এ এই কাহিনীর বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায় l কাহিনীতে বর্ণিত বিশাল পুকুরের মধ্যে এক কুণ্ডম সাগর থেকে বেরনো হিরণ নদীর কথাও এই বিবরণে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে l
এই এলাকার পরিচয় ও এখানে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা আমরা পেয়েছি জনসত্তা, নতুন দিল্লীর শ্রী মনোহর নায়েকের কাছে l
শ্রী বৃন্দাবনলাল বর্মার উপন্যাস ‘রানী দুর্গাবতী’-তেও বুন্দেলখণ্ড এলাকার পরশ থেকে তৈরী পুকুরগুলির উল্লেখ অন্য এক অর্থে পাওয়া যায় l
জব্বলপুর প্রাধিকরণ থেকে ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত জব্বলপুর স্মারকগ্রন্থে এই গল্পের উল্লেখ রয়েছে l এছাড়াও ১৯৩৯ সালে জব্বলপুরের কাছাকাছি যে ত্রিপুরী কংগ্রেসের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় তাতে ছাপা গাইডেও এই গল্পে বর্ণিত এলাকার কয়েকটি বিশাল বিশাল পুকুরের বিবরণ দেওয়া হয়েছিলো l স্বাধীনতা সংগ্রামের মাঝে এই ঐতিহাসিক সম্মেলন যেখানে শ্রী সুভাষচন্দ্র বসু ও শ্রী পট্টাভী সীতারামাইয়ার মতো নেতা উপস্থিত ছিলেন, সেখানেও পুকুরের উল্লেখ অপ্রাসঙ্গিক মনে করা হয়নি l
কিন্তু এই প্রসঙ্গের তুলনা করা যায় ১৯৯১ সালে তিরুপতি কংগ্রেস অধিবেশনের সঙ্গে l প্রচণ্ড জলসঙ্কটের সময় আয়োজিত এই সম্মেলনের প্যাণ্ডেল টাঙানো হয়েছিলো ‘অবিলল’ নামে এক বিশাল পুকুরের শুকিয়ে যাওয়া আগরের ওপর l আগরের আদ্রতার জন্য প্যাণ্ডেলের ভেতরের তাপমাত্রা বাইরের থেকে চার ডিগ্রী কম ছিলো l কিন্তু এই অধিবেশনে উপস্থিত আমাদের নতুন প্রজন্মের আত্মমুগ্ধ নেতাগন দেশের সামনে ছেয়ে থাকা বিভিন্ন প্রকার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য লোকবুদ্ধির ওপর কোন প্রকার ভরসা করেনি l এই রকমই ১৯৯৩ সালে কংগ্রেস অধিবেশন দিল্লী সীমানার সুরজকুণ্ডে হয়েছিলো l এই ঐতিহাসিক পুকুরটিও ভরাট করে দেওয়া হয়েছে l সর্বত্র পুকুরগুলিকে এই উপেক্ষা করার অনুপাতেই জল সঙ্কট বেড়ে চলেছে l
মহাভারতের সময়ের পুকুরগুলির মধ্যে কুরুক্ষেত্রের ব্রহ্মাসর, করনাল-এর কর্ণঝিল ও মিরাটের কাছে হস্তিনাপুরে শুক্রতাল আজও আছে এবং উত্সবের সময় লক্ষ লক্ষ লোক জমা হয় l
রামায়ণের কালের পুকুরগুলির মধ্যে শৃঙ্গেয়রপুরের পুকুর প্রসিদ্ধ l ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষন-এর নির্দেশক শ্রী বি. বি. লাল পুরনো তথ্যের ভিত্তিতে এলাহাবাদ থেকে ষাট কিলোমিটার দূরে খোঁড়া এই পুকুরটি খুঁজে বার করেছেন l শ্রী লালের মতানুসারে এই পুকুরটি খ্রীঃ পূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে তৈরী হয়েছিল l অর্থাত আজ থেকে ২৭০০ বছর আগে l
শৃঙ্গাপুরের পুকুরের সংক্ষিপ্ত বিবরণ গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত বই ‘হামারা পর্যাবরণ’ (১৯৮৮)-এ এবং বিস্তৃত বিবরণ নতুন দিল্লীর ‘সেণ্টার ফর সায়েন্স এণ্ড এনভারমেণ্ট’-এর মাধ্যমে, দেশের ঐতিহ্যময় জল সংগ্রহ প্রণালীর ওপর আয়োজিত সম্মেলনে শ্রী লালের লেখা ইংরেজী প্রবন্ধে পাওয়া যায় l
পনেরশো থেকে আঠারশো শতাব্দী পর্যন্ত সমাজের, তার সংগঠনের, বিদ্যাকেন্দ্রের বিস্তৃত বিবরণ শ্রী ধর্মপালের লেখা ‘ইন্ডিয়ান সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ইন এইটিন্থ সেঞ্চুরি’ এবং ‘দা বিউটিফুল ট্রি’ বইয়ে পাওয়া যায় l প্রকাশক-বিবলিয়া ইম্পোক্স প্রাইভেট লিমিটেড, ২১৮ আনসারি রোড, নতুন দিল্লী-২ l
এই বিষয়ের ওপরই ভিন্ন প্রসঙ্গে রুড়কী ইঞ্জিয়ারিং কলেজের ওপর লেখা ইতিহাস বই ‘হিষ্ট্রি অফ থমসন কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং’-এ খুব সুন্দর উল্লেখ রয়েছে l হয়তো খুব কম লোকই জানেন যে দেশের প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কলকাতা, বোম্বে বা দিল্লীর মতো বড় শহরে নয়, হরিদ্বারের কাছে রুড়কী নামের একটি ছোট্ট গ্রামে ১৮৪৭ সালে খোলা হয় l এখানে কলেজ খোলার প্রধান কারণ ছিলো কুড়ি বছর আগে তৈরী হওয়া ইন্দিরা নহর l এই নহরটি সালোনি নামের একটি নদীর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে l নহর, নদীর ওপর দিয়ে নহর পার করা এ সমস্ত কাজই করেছিলেন এই এলাকায় বসবাসকারী গজধরেরা l যা দেখে সেই সময়ের গর্ভনর থমসন এই প্রতিভাশালী গজধরদের উত্তম প্রশিক্ষণের জন্য রুড়কীতেই কলেজ খোলার জন্য ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে অনুরোধ করেন l এই কলেজটি শুধু ভারতের মধ্যেই নয় পুরো এশিয়ার মধ্যে প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ l এই প্রসঙ্গে যে বইটি থেকে সাহায্য নেওয়া হয়েছে সেটি হলো-লেখক কে ভি মিত্তল, ৭৯২ সিভিল লাইন্স, রুড়কী উত্তর প্রদেশ l এই বইটিই আমাদের পরিচয় করায় ডঃ জি ডি অগ্রওয়ালের সঙ্গে l উনি কানপুর আই আই টি-র অধ্যক্ষ ছিলেন এবং এ বিষয়ে আধুনিকতম লেখাপড়ার সঙ্গে তিনি গজধরদের পরম্পরাকেও সম্মান করেন l ওনার ঠিকানা হলো প্রমোদ বন, চিত্রকুট ধাম, করওয়ী, জেলা বান্দা, উত্তরপ্রদেশ l
এই বিষয়ের ওপর পুনের সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোশিয়েশন-ফর কালচারাল ফ্রিডম’-এ শ্রী ধর্মপাল ভাষণ দিয়েছিলেন l এই ভাষণ নতুন দিল্লীর সৈনিক হিন্দীপত্র ‘জনসত্তা’ ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করে যা পরে শতাব্দী প্রকাশন, ৪৮ স্বর্ণকার কলোনী, বিদিশা, মধ্যপ্রদেশের পক্ষ থেকে ‘ইংরেজদের আগের ভারত’ নাম দিয়ে বই আকারে প্রকাশিত হয় l গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত শ্রী রমেশ মিশ্র পঙ্কজ-এর বই ‘আজ কি উপেক্ষাঁয়ে’ এবং ‘নদীয়া অউর হম’-এও এই বিস্তৃত কিন্তু প্রায় বিস্মৃত বিষয়ের সুন্দর প্রকাশ পেয়েছে l
রিবার পুকুরগুলির তথ্য ১৯০৭ সালের গেজেটিয়ার থেকে নেওয়া হয়েছে l সেই সময়ের রিবা রিয়াসতে পড়তো যে সমস্ত গ্রামগুলি তার পুকুরগুলির বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায় এই গেজেটিয়ারে l
থর মরুভূমিতে জলের কাজের জন্য শ্রী ওম থানবী, সম্পাদক, ‘জনসত্তা’, চন্ডীগড়. শ্রী শুভ পটওয়া, ভীনাসর, বিকানের l শ্রী সুরেন্দ্রমল মোহনত, মরুভূমি বিঞ্জান কেন্দ্র, ১০৯ নেহেরু পার্ক, যোধপুর-এ এঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে l
দিল্লীর তিনশো পঞ্চাশ পুকুরের উল্লেখ ১৯৭১ সালে আদমসুমারীর রির্পোটে, মাছ পালন প্রবন্ধে পাওয়া যায় l ঐ প্রান্তটুকু নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা ভারতীয় মানচিত্র সর্বক্ষণ বিভাগ থেকে ১৮০৭ সালের দিল্লীর ওপর সম্প্রতি ছাপা এক নক্সায় অনেক পুকুর পাই l
এই ব্যাপারেই শ্রী মহম্মদ শাহীদের সৌজন্যে পাওয়া ১৯৩০ সালের দিল্লীর এক দুর্লভ নক্সায় ঐ সময়ের শহরে পুকুর ও কুয়োর শুনতি প্রায় তিনশো পঞ্চাশের সংখ্যা ছুয়ে থাকে l শাহিদজীর সঙ্গে ২৫৮৩ চুড়িওলান, দিল্লী-৬, এ যোগায়োগ করা যেতে পারে l
দক্ষিণের রাজ্য বিশেষ করে মাদ্রাজা প্রেসিডেন্সি, মহিশূর ও মাদ্রাজের পুকুরগুলির বিস্তার, সংখ্যা ও পরিচালনার ব্যাপারে এই এলাকার গেজেটিয়ার, সেচ ও প্রশাসনিক রির্পোট থেকে প্রচুর সাহায্য পাওয়া গেছে l এই সংযোজনে ১৯৮৩-র কর্ণাটক রাজ্য যোজনা বিভাগের শ্রী এম জী ভট্ট, শ্রী রামনাথন চেট্টী ও শ্রী অম্বাজী রাও দ্বারা তৈরী করা এক রির্পোট থেকেও সাহায্য নেওয়া হয়েছে l
এর মধ্যে প্রগতিশীল রূপে চিহ্নিত কর্ণাটক রাজ্যে জল সঙ্কট ক্রমশ বেড়েই চলেছে l কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় সরকার সে বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করছে l সুখের কথা হলো, এ ব্যাপারে সরকার পুকুরের ওপরই সবথেকে বেশী ভরসা করছে l ১৯৯৯ সালে কর্ণাটক সরকার একটি আধা-সরকারী সংস্থা গঠন করে l সংস্থাটির নাম ‘জল সংবর্ধনা যোজনা সঙ্ঘ’ l ২০০২-এর ৫ই জুন কর্ণাটক সরকার জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যের পুকুরগুলি সংস্কার ও দেখাশোনা করার এবং নতুন পুকুর খোঁড়ারও শপথ নেন l দিল্লীর প্রধান প্রধান কাগজগুলিতে এর বিজ্ঞাপনও ছাপা হয় l সরকার স্বীকার করে নেয় পুকুরের কাজ এখানে দীর্ঘকাল থেকে হয়ে আসছিলো এবং এখনও পুকুরগুলিই খাঁটি l
ভিত থেকে শিখর পর্যন্ত
একটা পুকুর কি ভাবে সম্পূর্ণ আকার ধারণ করে- এর প্রায় পুরো তথ্যই আমরা পাই আলওয়ার জেলার ভীকমপুরা কিশোরী গ্রামের সংস্থা ‘তরুন ভারত সংঘ’-এর শ্রী রাজেন্দ্র সিং এর কাছে l সংঘ গত কুড়ি বছরে এই এলাকায় সাড়ে সাত হাজারেরও বেশী পুকুর গ্রামের লোকেদের সঙ্গে মিলেমিশে তৈরী করেছে l
পুকুর খোঁড়ার সময় নেওয়া হয়েছে, জব্বলপুর থেকে প্রতি বছর যে হাজার হাজার পাঁজি প্রকাশিত হচ্ছে তার থেকে l প্রকাশক- লালা রামস্বরূপ রাম নারায়ণ পঞ্চ, ৯৪ লার্ডগঞ্জ, জব্বলপুর, মধ্যপ্রদেশ l বাংলায় এই পঞ্চাগকে পাঁজি বলা হয় l গুপ্তপ্রেস ও বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত প্রকাশনের পাঁজি বাংলার ঘরে ঘরে পাওয়া যায় l এই রকমই পাঁজি বেনারস, এলাহাবাদ, মথুরা, আমেদাবাদ পুনে, নাসিক এবং দক্ষিনেরও অনেক শহরে ছাপা হয় এবং সমাজের স্মৃতিতে সম্মিলিত পুকুর ও কুয়োর কাজ আরম্ভ করার মুহূর্ত বার বার বলে থাকে l
ঘাটৈয়াবাবার বিবরণ পেয়েছি হোশঙ্গাবাদের শ্রী রাকেশ দীওয়ানের কাছে l তাঁর ঠিকানা- কসেরা মহল্লা, হৌশঙ্গাবাদ, মধ্যপ্রদেশ l হিন্দীর পুরোনো অভিধানে এইরকম শব্দ সম্পূর্ণ অর্থসহ পাওয়া যায় l এই প্রসঙ্গে আমরা শ্রী রামচন্দ্র বর্মার প্রামাণিক হিন্দী অভিধান, প্রকাশক হিন্দী সাহিত্য কুটীর হাতীগলি, বেনারস থেকে প্রচুর সাহায্য পেয়েছি l
তুলসী দাসজীর লেখায় এই অংশের সারমর্মটুকু খুব সহজ ভাবেই প্রতিফলিত হতে দেখা যায় l
সংসার সাগরের নায়ক
সব জায়গাতেই পুকুর রয়েছে এবং সব জায়গাতেই তা তৈরী করার লোকও l এই রাষ্ট্রনির্মাতাদের, বর্তমান সমাজের লেখাপড়া জানা লোক এবং যারা লেখে, পড়ে তারা কি করে ভুলে গেলো, সে কথা সহজে বোঝা যায় না l
পরিচয়হীন করে দেওয়া এই লোকগুলিকে আজ ফিরে বুঝতে গেলে বর্তমানের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি উল্লেখযোগ্য কোন সাহায্য করতে পারে না l এক তো এই প্রতিষ্ঠানগুলি এঁদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না l আর যদিও বা কোন প্রকারে পারে তো মিস্ত্রী বা রাজমিস্ত্রীর বেশী ভাবতে পারে না l এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে যদিও বা এঁরা জায়গা পেয়েও থাকেন তাহলে তা অদক্ষ শ্রমিক বা খুব বেশী হলে শ্রমিক l এই নবনির্মিত পরিকাঠামোগুলিতে এমন লোক ও সংস্থা রয়েছে যারা লোক ক্ষমতার ওপর আস্থা তো রাখে কিন্তু তাদের বুদ্ধিকে স্বীকার করে নিতে পারে না l তাই খ্যাতিহীন করে দেওয়া এই লোকেদের কাছ পর্যন্ত আমরা খ্যাতিহীন লোকের মাধ্যমেই পৌঁছাতে পেরেছি l
রাজস্থানের গজধরের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে বুঝতে জয়সলমেরের শ্রী ভগবানদাস মহেশ্বরী ও ভংওরলাল সুথার তথা জয়পুরের শ্রী রমেশ থানবীর কাছে প্রচুর সাহায্য পাওয়া গেছে l এঁদের ঠিকানা হলো-শ্রী ভগবানদাস মাহেশ্বরী, পটওয়ি কী হাভেলি, জয়সলমের l শ্রী ভংওলাল সুথার, রাজোতিয়াবাদ, জয়সলমের l শ্রী রমেশ থানবী, রাজস্থান প্রৌঢ় শিক্ষণ সমিতি, ৭এ, ঝাঁলনা ডুঁগরি সংস্থান ক্ষেত্র, জয়পুর l
এই অধ্যায়ের নায়কদের অধিকাংশ পরিচিতি দেওয়া হয়েছে মৌখিক কথাবার্তা ওপর ভিত্তি করে l যতটা লিখিত সামগ্রীর ওপর নজর পড়েছে তা মুখ্যত গবেষণা কার্যের রূপান্তর, গেজেটিয়ার, পুরোনো রেকর্ড বা রিপোর্ট l শাস্ত্রীয় গ্রন্থের মধ্যে বাস্তুশাস্ত্র, মনসারসীরীস অথবা সমরাঙ্গণসূত্রধর-এর মতো জটিল গ্রন্থেই উল্লেখ পাওয়া গেছে l মনে করা হয় যে ষোলশ শতাব্দীর কাছাকাছি নায়ক শিল্পীদের সংগঠন ভাঙ্গতে শুরু করে এবং সেইসঙ্গেই এই শিল্পর সঙ্গে সমন্বিত বিভিন্ন গ্রন্থগুলিও লুপ্ত হতে থাকে l
এইরকম সঙ্কটের সময়েই গুজরাট, পাটনের সোমপুরা অঞ্চলে শিল্পী সূত্রধর নাথুজীর জন্ম হয় l তিনি নিজের আত্মীয় স্বজনদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বইগুলি সংগ্রহ করেন ও সংস্কৃতে ‘বাস্তুমঞ্জরী’ রচনা করেন l স্থপতি শ্রী প্রভাশঙ্কর ওধড়ভাও সোমপুরা এই গ্রন্থেরই মধ্যভাগ ‘প্রসাদ মঞ্জরীর’-র গুজরাটী অনুবাদ করেন l এই কাজের ধারাবাহিকতাতেই শ্রী ভারতানন্দ সোমপুরা এটি হিন্দি পাঠকদের জন্য ১৯৬৪ সালে প্রস্তুত করেন l
এই বইয়ের ভূমিকা শিল্পীদের বৈচিত্রের প্রতি সুন্দর আলোকপাত করেছে l এঁরা হলেন স্থপতি, অর্থাত যাঁদের স্থাপত্যের স্থাপনায় সম্পূর্ণ যোগ্যতা রয়েছে l এঁদের গুণ ও কর্মের অনুসরণকারী পুত্র বা শিষ্যকে সূত্রগ্রাহী বলা হয় l এঁরা রেখা চিত্র অঙ্কন থেকে শুরু করে স্থাপত্যের সকল কার্য সঞ্চালনে নিপুণ হন l মুখের ভাষা বা চলিত কথায় এঁরা ‘সূতার-ছোড়ো’ নামেও পরিচিতি পেয়েছন l ‘সূত্রমান প্রমান’ সম্পর্কে জ্ঞানপ্রাপ্ত তক্ষক পাথরের ছোট, বড় কাজ নিজেরাই করেন l এঁরা কাঠ ও মাটির কাজেও যথেষ্ট দক্ষ হন l
কিন্তু কেবল কুশলতা বা দক্ষতাই শ্রেষ্ঠ শিল্পীর পরিচয় নয়, বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে শিল্পীর দোষ-গুণও যজমান ভালোভাবে যাচাই করে নেন l গুণের সঙ্গে আচরণে গুণবান হন যিন তিনিই শ্রেষ্ট শিল্পী হতে পারেন l ধার্মিক, সদাচারী, মিষ্টভাষী, চরিত্রবান, অকপট, নির্লোভী, বহুবন্ধু রয়েছে যাঁর, নিরোগ, দোষহীন শরীর হওয়াও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ যতটা নাকি রেখাচিত্রে দক্ষ হওয়া বা গণিতের জ্ঞাতা হওয়া l সমাজ তৈরী ও পরিচালনা করেন যে শিল্পী পরিবার তাদের ঠিক মতো বুঝতে এই বইয়ের ভূমিকা যথেষ্ট উপযোগী হতে পারে l
ওড়িষার মহাপাত্র ও তাদের সঙ্গে যুক্ত শিল্পী পরিবারগুলি এখন পুরী ও ভুবনেশ্বরে বসবাস করছেন l এঁদের পূর্বপুরুষেরাই পুরী ও ভুবনেশ্বরের সুন্দর মন্দিরগুলি নির্মাণ করেছিলেন l
অনঙ্গপালের দিল্লী ও সেই সময় একাদশ শতাব্দীতে মহারৌলির কাছে তৈরী অনঙ্গতাল নামক পুকুরটি পুরাতত্ত্ব বিভাগ কয়েক বছর আগে খুঁজে বের করেছে l যোগমায়া মন্দিরের পিছনে খোঁড়াখুঁড়ি তখনও শেষ হয়নি কিন্তু পাথরের সিঁড়িতে সজ্জিত এক গভীর লম্বা চওড়া পুকুরের আকার স্পষ্ট হয়ে উঠছিলো l
মাটির গভীরে জল দেখতে পাওয়া সিরভাবদের ব্যাপারে বিকানের-এর শ্রী নারায়ন পরিহার, শ্রী পুনমচন্দ্র এবং মধ্যপ্রদেশের নরসিংহপুরের কৃষক শ্রী কেশবানন্দ মিশ্রের কাছে তথ্য পেয়েছি l
পথরোট, টকারি, মটকুট, সোনকরের মত নাম ধীরে ধীরে ভাষার থেকে সরে গেছে, তাই নতুন অভিধানে এগুলি পাওয়া যায় না l এগুলির সূচনা আমরা এই শব্দগুলির মতোই পুরোনো হয়ে যাওয়া অভিধানে পেয়েছি l
বনবাসী সমাজের জন্য এমনিতে বলার জন্য অনেক গবেষণা গ্রন্থই আছে কিন্তু এগুলি বেশির ভাগই খাওয়া দাওয়া রহন-সহন-এর বর্ণনা করে থাকে, সেটাও এমন শৈলীতে যেন তাদের অন্ন জল আলাদা ছিলো l বাজে রকমের কৌতুহল বা এক বিচিত্র উপকারের ভাবনায় ভরপুর এইরকম সাহিত্যে বনবাসী সমাজের উত্কৃষ্ট গুণগলির বা জলের সঙ্গে সম্পর্কিত টেকনিক্যাল দক্ষতার পরিচয় পাওয়া সম্ভব নয় l এই গুণের সংক্ষিপ্ত পরিচয় আমরা ‘ভীল সেবা সংঘ’ থেকে প্রকাশিত ‘ভোগীলাল পণ্ডিয়া স্মৃতিগ্রন্থ’ থেকে পেয়েছি l বাঞ্জারাদের প্রবন্ধে শাহজাহর উজিরের প্রসঙ্গ বরার-ক্ষেত্রর পুরোনো দস্তাবেজে দেখতে পাওয়া যাবে l এ ব্যাপারে আরও সাহায্য পাওয়া যেত পারে, শ্রী এস সি লায়ল-এর তৈরী করা বরার জেলা গেজেটিয়ার, ১৮৭০, বরার সেন্সাস ১৮৮১ সাল l
মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড ও ছত্রিশগড়ে বাঞ্জারাদের পুকুর তৈরীর সূচনা আমাদের দেন শ্রী পঙ্কজ চতুর্বেদী, মহোবা নাকা, ছতরপুর ও শ্রী রাকেশ দীওয়ান, মধ্যপ্রদেশ l
ওড়িয়াদের ব্যাপরে মৌখিক তথ্য শ্রী দীনদয়াল ওঝার কাছে ও লিখিত তথ্য দিল্লীর শ্রী মহম্মদ সাহীদের সৌজন্যে পাওয়া ‘জাতি ভাস্কর’ নামক এক দুর্লভ বই থেকে নেওয়া হয়েছে l বইটি লিখেছিলেন মুরাদাবাদ নিবাসী বিদ্যাবারিধি পন্ডিত শ্রী জওলাপ্রসাদ l হিন্দি অনুবাদ করেন শ্রী খেমরাজ শ্রীকৃষ্ণদাস l ১৯২৮ সালে মুম্বই-এর ছাপাখানা থেকে এটি প্রকাশিত হয় l
আজকের আধুনিক সমাজে জসমা ওঢ়ন লোক-কথা-গাঁথা জীবন-শৈলী কৌতূহল ও জিজ্ঞাসার পাত্র হতে পারে, কিন্তু লোক নায়িকা কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায় l তবুও জসমার অদ্ভুত যশ আজও রাজস্থানের লাঙ্গা সমাজের সুরে গুঞ্জরিত হয় এবং গুজরাতের নাচ ‘ভবই’-এর তালে পা মিলিয়ে নিজেদের বিস্মৃতির অতল থেকে স্নেহ, মান ও শ্রদ্ধার জন্য বাঁচিয়ে রাখে l
জসমা ওঢ়নের জীবনী রঙ্গীন পাতায় ‘অমর চিত্রকথা সিরিজ’ ১৯৭৭ সালে শেষবারের মতো ছেপেছিলো l বর্তমানে হারিয়ে যাওয়া এই সংখ্যাটি আমরা দশমবর্ষের ছাত্র শ্রী ইন্দ্রজিত্ রায়-এর কাছে পাই l তার ঠিকানা-এইচ ১৪, কৈলাশ কলোনি, নতুন দিল্লী l এই ধারাবাহিকতাতেই দেখে নেওয়া যেতে পারে সুশ্রী শান্তা গান্ধীর নাটক জসমা ‘ওঢ়ন’, প্রকাশক-রাধাকৃষ্ণ প্রকাশন, ২-৩৮ আনসারী রোড, দরিয়াগঞ্জ, নতুন দিল্লী l
ইন্দিরা নহরের ওড়িয়াদের বিষয়ে আরও বেশি জানার থাকলে উরমূল ট্রাস্টের আয়োজিত নহর যাত্রার জন্য যে রির্পোট তৈরী করা হয়েছিলো তাতে পাওয়া যেতে পারে l
ওড়িষার পুকুগুলি যাঁরা করেছিলেন তাঁদের প্রাথমিক তথ্য আমরা পেয়েছি, গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠানের শ্রীমতী কাজল পন্ডিয়া ও শ্রী পারস ভাই প্রদাতা, গ্রাম উদয়গিরি, ফুলবনী, ওড়িষা l
খরিয়া জাতির পরিচয় মধ্যপ্রদেশ সরকারের পত্রিকা ‘মধ্যপ্রদেশ সন্দেশ’-এর বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত বিভিন্ন বিষয় থেকে পাওয়া গেছে l
মুসহর ও ডাঢ়িদের পুকুরের সঙ্গে অটুট সম্বন্ধের পরিচয় আমরা বিহারের শ্রী তপেশ্বর ভাই ও গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠানের শ্রী নির্মল চন্দ্রের কাছে পেয়েছি l উত্তরে হিমাচল ও পাঞ্জাব থেকে শুরু করে মধ্যে নাসিক, ভাণ্ডারা পর্যন্ত পুকুরের ধারাবাহিকতায় কোহলিয়দের বিশিষ্ট পরিচয় সর্বসেবা সঙ্ঘ, গোপুরী, ওর্ধা-র শ্রী ঠাকুরদাস বঙ্গ, শ্রী বসন্ত বোম্বটকর ‘সেণ্টার ফর সায়েন্স এন্ড এনভারমেণ্ট’, এফ-৬, কৈলাস কলোনী, নতুন দিল্লীর শ্রী অনিল অগ্রওয়াল তথা শ্রী মোহন হীরাবাঈ, দেশাই গঞ্জ, গড় চিরৌলি, মহারাষ্ট্র থেকে পেয়েছি l
কোঙ্কনের গাওড়ি জাতির পরিচয় দিয়েছে গোয়ার সংস্থা, ‘শান্তিময় সমাজ’, পোষ্ট বন্দোড়ার শ্রী কলানন্দ মণি ও শ্রী নিরজ l এই বিষয়ের ওপরই লেখা শ্রী কলানন্দ মণির একটা লেখা গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠানের মাসিক পক্র ‘গান্ধীমার্গ’-এ ১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারী সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে l
তামিলনড়ুর সমৃদ্ধ এরি পরম্পরার ওপর মাদ্রাজের সংস্থা ‘পেট্রিওটিক এন্ড পিপলস ওরিয়েণ্টেড সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি গ্রুপ’ প্রচুর কাজ করেছে l এই বিষয়ের ওপর শ্রী টি. এম. মুকুন্দের লেখা সংস্থার পত্রিকা, ‘পি পি এস টি বুলেটিন’ সংখ্যা ১৬, সেপ্টেম্বর ১৯৮৮ ছাড়াও আমরা অনান্য প্রবন্ধ থেকেও ছোটখাটো বিষয় পেয়েছি l
মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্য এলাকার জেলা দস্তাবেজে ইংরাজী লেখকদের জন্য পুকুর বিষয়ক ইংরাজীর দু তিনটি প্রচলিত শব্দ-ট্যাঙ্ক, রিজার্ভার প্রভৃতিতেই শেষ হয়ে যায় l এরি শব্দের উল্লেখ খুঁজলে হয়তো বা কোথাও পাওয়া যেতেও পারে! কিন্তু ১৯৫৫ শালে শ্রী এইচ এইচ উইলসন-এর লেখা একটি ব্যতিক্রমি বই ‘গ্লসারি অফ জুডিসিয়াস রেভিনিউ টার্মাস এন্ড অফ ইউসফুল ওয়ার্কাস অকারিং ইন অফিসিয়াল ডকুমেণ্টস, রিলেটিং টু দা এডমিনিসট্রেশান অফ দা গভর্নমেণ্ট’-এই বিষয়ের সঙ্গে নিজেদের সমাজ সম্পর্কে সঠিক পরিচয় দেয় l
পলিওয়াল ব্রাহ্মণদের প্রারম্ভিক সূচনা শ্রী ভুটু পাটওয়ার-এর কাছে পাওয়া গেছে l মহারাষ্ট্রের চিতপাবন ও দেবরুখ ব্রাহ্মণদের কথা পূর্বে উল্লেখিত ‘জাতি ভাস্কর’ বই থেকে নেওয়া হয়েছে l
পুষ্করণ ব্রাহ্মণ ও পুষ্কর সরোবরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় আমরা কর্নেল ডাট-এর প্রসিদ্ধ বই ‘এনেলস্ এণ্টিবিউট অফ রাজস্থান’-এর হিন্দী অনুবাদ ‘রাজস্থান কা ইতিহাস’ (সম্পাদনা শ্রী বি আর মিশ্র, শ্রী জে পি মিশ্র ও শ্রী রায় মুন্সি দেবীপ্রসাদ) থেকে পেয়েছি l
ছত্রিশগড়ের রামনামি সম্প্রদায়ের ওপর ‘মধ্যপ্রদেশ সন্দেশ’-এর সংখ্যায় এখানে ওখানে কিছু পরিচয় করেছে l
সাগরের আগর
পুকুরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে আগৌরের বিভিন্ন নাম আমরা চণ্ডীপ্রশাদ ভট্ট পোঃ গোপেশ্বর, জেলা চমোলি, উঃ প্রঃ, শ্রী রাকেশ দীওয়ান, শ্রী গুনসাগর সত্যার্থী, পোঃ কুণ্ডেশ্বর, চিমকগড় মঃ প্রঃ ও ‘গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠান’ নতুন দিল্লী শ্রী রাজীব বোড়র কাছে পেয়েছি l
আগর ও পাড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত শব্দগুলির পরিচয় শ্রী রমেশ থানবী ও শ্রী তপেশ্বর ভাই, পোঃ জগত্পুরা, ভায়া ঘোঙ্ঘরডীহা, সৌজন্যে দেখতে পাই, থানওয়ীজীব ঠিকানা হলো – মুচিগলি, ফলৌদি, যোধপুর l
পাঁক আটকানোর প্রাসঙ্গিক বিবরণ শ্রী শুভু পাটওয়া ও তাঁরই গ্রাম ভিনাসর, বিকানের-এর শ্রী নারায়ন পরিহার ও জনসত্তা চণ্ডীগড়ের সম্পাদক শ্রী ওম থানবির কাছে পাওয়া গেছে l
পাঁকের আরও এক নাম ‘কপা’ ‘কাপু’ l পাঁক বার করার ব্যবস্থা তত দিনেরই পুরোনো যত দিনের পুরোনো পুকুর l বাস্ত্তশাস্ত্রের সংস্কৃত গ্রন্থ ‘মানসার’-এ একে ঢিম বিধান বলা হয়েছে l
পাঠিয়াল, হথনি ও ঘটেয়াবাবর সঙ্গে সম্পর্কিত সামগ্রী, শ্রী ভগবানদাস মাহেশ্বরী ও শ্রী দীনদয়াল ওঝার সঙ্গে কোলাপাড়া জয়সলমেরে যে কথাবার্তা হয়েছিলো তার ওপর ভিত্তি করে লেখা l স্তম্ভের বিভিন্নতা বুঝতে আমরা শ্রী রাকেশ দিওয়ান ও তাঁর বোন সুশ্রী ভারতী দিওয়ানের-এর কাছে প্রচুর সাহায্য পেয়েছে l পুরুষ মাপের সূক্ষ্মতা আমরা বুঝেছি শ্রী নারায়ণ পরিহারের কাছে l এই সম্পর্কিত বাস্তুশিল্পের প্রাচীন গ্রন্থ, ‘সমরাঙ্গন সূত্রধার’-এ অণু থেকে শুরু করে যোজন পর্যন্ত মাপ দেখতে পাওয়া যায় l লাখেটা বিষয়ে পূর্ণ পরিচয় পেয়েছি ওস্তাদ নিজামুদ্দীনজীর কাছে l তাঁর ঠিকানা – বাল ভবন, কোটাল মার্গ, নতুন দিল্লী l ভোপালতালের মণ্ডিদ্বীপের কাহিনী শ্রী ব্রজমোহন পাণ্ডের বই ‘পুরাতত্ত্ব প্রসঙ্গ’-তে দেখা যেতে পারে l এতে মণ্ডীদ্বীপ ছাড়াও অন্য কয়েকটি সিংহল দ্বীপেরও উল্লেখ রয়েছে. আজও এই এলাকাতে সিংহলদ্বীপ নামের কিছু গ্রাম পাওয়া যায় l
ডাটের সঙ্গে সম্পর্কিত বস্তুসামগ্রী গোয়ার শ্রী কলানন্দ মণি, আলওয়ারের শ্রী রাজেন্দ্র সিং তথা চাকসু জয়পুরের শ্রী শরদ জোশীর সঙ্গে যাত্রাগুলি ছাড়াও শ্রী রামচন্দ্র বর্মার অভিধানে বর্ণিত এর সঙ্গে মিল রয়েছে চুরুণ্ডি, চুকরৌণ্ড প্রভৃতি শব্দের ভিত্তিতে তৈরী করা হয়েছে l
জল চুরির ব্যাপারে যে বুন্দেলী শব্দ, তা শ্রী সুনসাগর সত্যার্থীর কাছে পাওয়া গেছে l
সাফ মাথার সমাজ
পুকুরের অগৌর পরিষ্কার রাখার প্রারম্ভিক তথ্যে শ্রী শুভু পাটওয়ারের বিশেষ সহায়তা রয়েছে l মধ্যপ্রদেশ ও বিহারের পুকুরের সাফ-সাফাই-এর অধিকাংশ বিষয় শ্রী রাকেশ দীওয়ান ও তপেশ্বর ভাইয়ের কাছে পাওয়া গেছে l বিহার হিন্দী গ্রন্থ আকাদেমী, কদমকুঁয়া, পাটনা থেকে প্রকাশিত শ্রী হবলদার ত্রিপাঠী সহৃদয়-এর বই ‘বিহার কী নদীয়াঁ’-তেও দেখা যেতে পারে l
দক্ষিণে প্রচলিত ধর্মদা ও মান্যম প্রথার বিস্তার বোঝার জন্য এই বইগুলি থেকেও সাহায্য পাওয়া যায় – তামিলনড়ু সরকারের ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত – ‘হিস্ট্র এফ ল্যাণ্ড রেভিনিউ সেটেলমেণ্ট এন্ড বুলেটিন এফ ইণ্টারমিডিওটারী টেনিয়ার্স ইন তামিলনাড়ু’-এই বইটি প্রসঙ্গে যে কথাটি উল্লেখযোগ্য তা হলো এ ধরনের বই আর দ্বিতীয়টি দেখা যায় না l বর্তমানে ক্লান্ত হয়ে পড়া সমাজ ও সরকারকে পরিচালিত করছে যে সরকারী প্রকল্পগুলি তার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন সমাজে রচিত ও পরিচালিত সংস্থার ও তাদের ঐতিহ্যের সবিস্তার চিত্রন করেছে এই বইটি l এছাড়াও ডব্লু ফ্রান্সিসের লেখা (১৯০৬সাল) ‘সাউথ আরকটি জেলা গেজেটিয়ার’-এও কিছু তথ্য পাওয়া যায় l
গৈঙ্গজী কল্লার প্রসঙ্গ আমরা ফলৌদি, যোধপুরের শ্রী শিবরতন থানবীর কাছে এবং গৈঙ্গজী যে এলাকার পুকুরগুলি দেখাশোনা করতেন সেই পুকুরগুলির পরিচয় আমরা তাঁর পুত্র শ্রী জয়প্রকাশ থানবীর সঙ্গের কিছু যাত্রায় পেয়েছি l গৈঙ্গজী কল্লার মতো বিভূতি প্রায় প্রতিটি গ্রাম ও শহরের পুকুর ও নদীর ঘাটে উপস্থিত থাকতেন এবং সারা বছর পুকুরগুলির দেখাশোনা করতেন l ঘাটের ওপর আখড়ার প্রচলন এই কারণেই ছিলো বোধহয় l ১৯০০ সাল পর্যন্ত যমুনার ঘাটে আখড়ার স্বেচ্ছাসেবকদের পাহারা থাকতো l এই ভাবেই এখানের পুকুর ও বাওড়িগুলিও আখড়ার দেখাশোনায় পরিষ্কার রাখা যেতো l আজ যেখানে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেখানে মলকাগঞ্জ-এর কাছে কখনও দীনার পুকুর ছিলো l এই আখড়ায় দেশ বিদেশের পালোয়ানের দলের আয়োজন করা হতো l দীনার পুকুরের প্রারম্ভিক পরিচয় আমরা শ্রী কৈলাস জৈন-এর কাছে পেয়েছিলাম l এই পুকুরের বিস্তৃত তথ্যের জন্য দিলীপকুমার, দ্রারা, শ্রী কিশোরীলাল, বিলডিং নং ৬২৯, গলি রবিন সিনেমা, সব্জিমন্ডী, মলকাগঞ্জ, দিল্লী ৭১-এ যোগায়োগ করা যেতে পারে l
লাহাস-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হয়েছে কর্ণেল টাড-এর লেখা ‘এনলস এন্ড এণ্টিবিউটিস অফ রাজস্থান’-এর হিন্দী অনুবাদে দেওয়া সূচনার ওপর ভিত্তি করে l
নারনৈল হরিয়ানার প্রসিদ্ধ পুকুরে আজও মুণ্ডন সংস্কারের পর সন্তানদের পিতা-মাতা পুকুর থেকে মাটি তুলে পাড়ে দেন l এই পরম্পরার বিস্তৃত তথ্য ‘গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠান’, নতুন দিল্লীর শ্রী রমেশ শর্মার কাছে পাওয়া যেতে পারে l
সহস্র নাম
দিল্লীর শ্রী রাজেন্দ্র কালিয়া ও তাঁর স্ত্রী সুশ্রী মুকুল কালিয়া দিল্লীর পুকুর, ডিগ্গি, হৌজ ও নহরগুলির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ l শ্রীমতী মুকুল পুরোনো দিল্লীর ওপর ছোটদের জন্য একটি সরস বইও লিখেছেন l প্রকাশক-‘গান্ধী শান্তি কেন্দ্র’, বি-৫২, মধুবন, দিল্লী-৯২ l মুকুলজীর ঠিকানা-১৯৯, সহযোগ পোর্টমেণ্টস, ময়ূর বিহার, দিল্লী l
আম্বালার ডিগ্গিগুলির পরিচয় আমরা ওখানের শ্রী দেবীশরণ দেবেশ-এর কাছে পেয়েছি l ওনার ঠিকানা- ‘গান্ধীশান্তি প্রতিষ্ঠান’ কেন্দ্র ১৬৩০ জয়প্রকাশ নারায়ণ মার্গ, আম্বালা, হরিয়ানা l লালকেল্লার লাহৌরি গেটের কাছে তৈরী লাল ডিগ্গীর সূচনা উর্দুতে লেখা স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁর বই ‘আসারুস সনাদিদ’ (সন ১৮৬৪)- থেকে পাওয়া গেছে l এই বইটি পর্যন্ত আমাদের পৌঁছাতে সাহায্য করেছিলেন গান্ধী সংগ্রহালয়ের শ্রী হরিশচন্দ্র মাথুর, ‘গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠা’-এর শ্রী এইচ এল ওধয়া l
পাঠকদের এটা জেনে আশ্চর্য লাগবে যে লাল ডিগ্গি এক ইংরেজ, লর্ড এডিনবরো তৈরী করিয়েছিলেন l রাজকর্মচারীদের মধ্যে এটি তার নামেই পরিচিত ছিলো l কিন্তু দিল্লীর মানুষ একে ল্লাল ডিগ্গিই বলতেন, কেননা পাঁচশো ফুট লম্বা ও দেড়শো ফুট চওড়া এই পুকুরটি লাল পাথর দিয়ে তৈরী করানো হয়েছিলো l ১৯০৬ সালে প্রকাশিত হর্ণ-এর বই ‘সেওন সিটিজ অফ ডেলহি’-তে লাল জিগ্গির সুন্দর বিবরণ রয়েছে l দিল্লীর অন্য পুকুর নহর, বাউড়িগুলি বিষয়ে, কারস্টিফেনের ‘আর্কিওলজি এন্ড মনুমেণ্টাল রিমেন্স অফ ডেলহি’, সন ১৮৭৬ ও শ্রী জি জি পেজের সম্পাদিত চারখন্ডে ‘লিস্টঅফ মহমেডান এন্ড হিন্দু মনুমেণ্ট, ডেলহি প্রভিন্স’, সন ১৯১৩ থেকেও অনেক সাহায্য পাওয়া যেতে পারে l
খন্ডোয়া-র কুণ্ডর পরিচয় শ্রী গোপীনাথ কালভোর, রতন মঞ্জিল, দুধ তলাই, খাণ্ডোয়া থেকে পাওয়া গিয়েছে l
টিহরি গাড়ওয়ালের বিহারীলাল হিমালয়ের পুকুরগুলি ও চালগুলির সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়েছেন l তাঁদের সংস্থা ‘লোক জীবন বিকাশ ভারতী’, বুঢ়া কেদার, পি তাথী নিজেদের অন্যান্য সামাজিক কাজের সঙ্গে সেখানে আবার ফিরে চালের প্রচলন শুরু করার চেষ্টা করছে l শ্রী মৈথিলীশরন গুপ্তর চিরগ্রামের চোপরার বিবরণ শ্রী গুণসাগর সত্যার্থীর কাছে পাওয়া গেছে l
ফুটেরা তাল, ‘জনসত্তা’ নতুন দিল্লীর সুধীর জৈন-এর কাছে, বরাতিতাল ‘বিহার কী নদীয়াঁ’ বই থেকে এবং হা হা পঞ্চকুমারী তাল ও লখীসায়রের তিনশো পঁয়ষট্টি পুকুরের সঙ্গে সম্পর্কিত বিবরণ আমরা শ্রী নির্মলচন্দ্রর কাছে পেয়েছি l
জায়কেদার পুকুরের ওপর ইন্দোরের দৈনিকপত্র ‘নঈ দুনিয়ার’ ১৭মে ১৯৯১-এর সংখ্যায় ছাপা শ্রী বাবুরাও ইংগলের লেখাটি পুকুরের সহস্রনামের আলাদা স্বাদে ভরপুর l
বারসনার পিলী পোখরের খবর সুশ্রী বিমলা দেবীর কাছে পেয়েছি l তাঁর সঙ্গে – ডঃ সুভাষচন্দ্র তোমর, চক্কিওয়ালা কটরা, বরসনা, জেলা মথুরা, উত্তরপ্রদেশ যোগাযোগ করা যেতে পারে l বিচিত্র গোলাতালের পরিচয় আমরা শ্রী শরদ যোশীর কাছে পেয়েছি l তিনিই জয়বান তোপ ও তার থেকে বেরিয়ে কুড়িমাইল দূরে পড়া গোলাতাল দেখারও ব্যবস্থা করেন l
দশফলা পদ্ধতির মৌখিক বিবরণ বাপটলা অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রী জি কে নারায়ণের কাছে পাওয়া গেছে l ‘গান্ধী শান্তি কেন্দ্র’ হায়দরাবাদ থেকে অন্ধ্রের পরিবেশের ওপর তেলেগুতে প্রকাশিত এক রির্পোটে এই এলাকার পুকুরগুলির বিবরণ রয়েছে l শৃঙ্খল পদ্ধতিতে জোড় পুকুর অনেক জায়গাতেই করা হতো l দক্ষিণ ছাড়াও বুন্দেলখণ্ড রাজস্থান ও গুজুরাতেও এই ব্যবস্থা দেখা যায় l মধ্যপ্রদেশের এই ধরনের পুকুরগুলির বর্ণনা ইন্দোরের দৈনিক পত্র ‘নই দুনিয়া’-র ১৯৯১ সালে ১ লা নভেম্বর সংখ্যায় শ্রী রামপ্রতাপ গুপ্তর লেখায় পাওয়া যায় l তাঁরা ঠিকানা হলো রাষ্ট্রীয় মহাবিদ্যালয়, রামপুরা, মন্দসৌর, মধ্যপ্রদেশ l
মুনৈরা মধ্যপ্রদেশের পড়াওলি গ্রামে সাত স্তরের পুকুরের শেকল ছিলো l পড়াওলির বিবরণের জন্য গোয়ালিওর ‘সায়েন্স সেণ্টার’-এর অরুণ ভার্গব-এর সঙ্গে এল বি ১৭৬, দর্শন কলোনি, গোয়ালিয়রে যোগায়োগ করা যেতে পারে l ছিপলাই শব্দের সুন্দর ব্যবহার আমরা প্রথমবার ওস্তাদ শ্রী নিজামুদ্দীন-এর কাছে শুনতে পাই l এই প্রসঙ্গে ছত্রিশগড় ও বিহারের পুকুরের নামগুলি বুঝতে আমাদের শ্রী রাকেশ দিউয়ান ও শ্রী নির্মলচন্দ্র সাহায্য করেছেন l ভোপাল তালের বিস্তৃত বিবরণ শ্রী ব্রজমোহন পাণ্ডের বইয়ে পাওয়া যাবে l এতে দেশের কয়েকটি প্রাচীন পুকুরেরও পরিচয় আছে l পলওল স্থানের সূচনা আমরা পেয়েছি দিল্লীতে লোকশিল্পীদের নিয়ে কাজ করছে সংস্থা ভারতী-র শ্রী ভগবতী প্রসাদ হটওয়ালের কাছে l ঠিকানা- সারথী ফ্ল্যাট নং ৪, শঙ্কর মর্কেট, কনাট প্লেস নতুন দিল্লী-১ l
ঝুমরি তলৈয়া নামের সঙ্গে আমরা, দেশের হাজার হাজার মেয়েদের মতোই আকাশবাণীর বিবিধভারতী অনুষ্ঠানের দ্বারাই পরিচিত হয়েছি l
মরীচিকাকে মিথ্যা করে পুকুর
এই অংশটি লেখার জন্য আমরা রাজস্থান, জয়সলমের, বিকানের তথা বাড়মের জেলার গেজেটিয়ার ও হিন্দী এলাকার ১৯৮১ সালের জনগণনা রির্পোট থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি l এছাড়াও বার বার যাতায়াতে মরুভূমি ও সেখানের সমাজের জল সম্বনদ্ধিত বুদ্ধিমত্তার আভাস পাওয়া গেছে l ১৯৯২ সালে কে কে বিড়লা, রাজস্থানের জলসংগ্রহ-এই বিষয়ের ওপর অনুপম মিশ্রকে এক গবেষণা বৃত্তি দেয় l এই যাত্রার বেশিরভাগই এই বৃত্তিরই অন্তর্গত l
জয়সলমের শহর ও তার আশেপাশের পুকুরগুলির প্রারম্ভিক পরিচয় শ্রী নারায়ণলাল শর্মার লেখা ‘জয়সলমের’ নামক বই থেকে পাওয়া গেছে l প্রকাশক – গোয়েল ব্রার্দাস, সূরজ পোল, উদয়পুর l
এই এলাকা সম্পর্কে শ্রী ওম থানবী, শ্রী ভগবানদাস মহেশ্বরী, শ্রী দীনদয়াল ওঝা ও ‘রাজস্থান গো সেবাসঙ্ঘ’-এর শ্রী ভংওরলাল কোঠারীর সঙ্গে সময় সময় হওয়া কথাবার্তা থেকে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি l ‘রাজস্থান গো সেবা সঙ্ঘর’ ঠিকানা-রানী বাজার, বিকানের l
ঘড়সীসর পুকুরটির গড়সীসর বা গড়ীসর নামেও পরিচিতি রয়েছে l এই পুকুরের ধারে তৈরী মন্দির ঘাট, রান্নাঘর, পোল ও পুকুরে জমা হওয়া মেলার বর্ণনা আমরা উন্মেদ সিং মেহতার গজল থেকে পেয়েছি l বইটি লক্ষ্মৌ-র নবকিশোর প্রেস থেবে ১৯২৯ সালে প্রকাশিত হয় l এটি আমরা জয়সলমেরের শ্রী ভগবানদাস মাহেশ্বরীজীর ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে পেয়েছি l
পুকুর বাঁধা ধর্মভাব
পুকুরের স্বভাবধর্মের বর্ণনা ‘ডিঙ্গল ভাষাকোষ’ থেকে পাওয়া গেছে l এটি ১৯৫৭ সালে নারায়ণ সিং ভাটির সম্পাদনায় ‘রাজস্থান গবেষণা সংস্থা’, চৌপাসনী, যোধপুর থেকে প্রকাশিত হয় l কোষের হমিরমালা খণ্ডে পুকুরের পর্যায়বাচী শব্দ শুণে কবি হমিরদান রতনু একে স্বভাব ধর্ম বলেছেন l
সুখ ও দুখের সঙ্গে পুকুরকে যুক্ত করার প্রসঙ্গ আমরা শ্রী ভগবান দাস মাহেশ্বরী, শ্রী রাজেন্দ্র সিং ও শ্রী কলানন্দ মণির কাছে পেয়েছি l
বুন্দেলখণ্ডের মাটির তলায় পোঁতা সম্পত্তি থেকে পুকুর তৈরীর বিবরণ শ্রী যোগেশ্বর প্রসাদ ত্রিপাঠীর সম্পাদনায় ব্রহ্মানন্দ মহাবিদ্যালয়, রাঠ হমিরপুর, উত্তরপ্রদেশ থেকে ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত ‘স্বামী ব্রহ্মানন্দ অভিনন্দন’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে l এই বইটিতে শ্রী বদ্রীপ্রসাদ ধবলের লেখা মহোবা নগরের সংক্ষিপ্ত পরিচয়-এ বিক্রম সংগত ২৮৬ থেকে ১২৪০ পর্যন্ত চন্দেল বংশের রাজত্বের পরিচয় ও তার বাইশ প্রজন্মের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে l সেখানকার বাইশটি বড় পুকুরের নামও দেওয়া হয়েছে, এই নামগুলির ভিত্তিতেই l ‘শ্রী ব্রহ্মানন্দ অভিনন্দন’ গ্রন্থটি আমরা পাই মহোবা-র শ্রী মনোজ পটেরিয়ার সৌজন্যে l হাঁক ডাকের সঙ্গে বিক্রি হওয়া এলাহাবাদী পেয়ারা ও নাগপুরী কমলার কথা সকলেই জানেন l কিন্তু বলদেব গড়ের মাছ ? বাংলায় বলদেব গড়ের মাছ নিয়ে যাও, যেন এই রকম ডাক শোনা যায় l এই বলদেবগড় বাংলায় নয় বুন্দেলখণ্ডে l এখানের পুকুরের মাছ খুব স্বাদু বলে খ্যাতি রয়েছে l
ছেরছেরা উত্সব ও ছত্রিশগড় সম্পর্কিত অন্যান্য সূচনা, পুকুরের বিয়ে ও বড় গ্রামের পরিভাষায় যে- ছৈ আগর ছৈ কোরির কথা বলা হয়েছে তা রাকেশ দীওয়ান-এর দান l
সীতাবাউড়ি উল্কি করানো সম্পর্কিত তথ্য, মধ্যপ্রদেশ সরকার কর্ত্তৃক প্রকাশিত ‘চর্তুমাসিক’ পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যা থেকে নেওয়া হয়েছে l এই প্রসঙ্গে কুরাঁও সমাজের মহিলাদের মধ্যে উল্কির ঐতিহ্যের ওপর দুটি পঙক্তি ‘মাদ্রাজ ডিসট্রিক গেজেটিয়ার’ সিরিজে-এ ডব্লু ফ্রান্সিসের লেখা সন ১৯০৬-এ ‘সাউথ আরকট জেলা গেজেটিয়ার’ থেকে পাওয়া গেছে l
বিন্দুসাগরের বর্ণনা করা হয়েছে কর্নেল বি এল বর্মার সঙ্গ মৌখিক আলোচনার থেকেই l ওনার ঠিকানা হলো এম ৪৯, গ্রেটর কৈলৈশ, ভাগ ২, নতুন দিল্লী-৪৮ l এই প্রসঙ্গে বেনারসের পুকুরগুলির নামও আবার বলা যেতে পারে l এগুলির নামকরণও সেই ভিত্তিতেই করা হয়েছিলো যে, দেশের সমস্ত নদীগুলির পবিত্র জল এখানেও সংগৃহীত রয়েছে l জেমস প্রিন্সেপ নামের এক ইংরেজ আিধকারীক ১৮২০ সালের কাছাকাছি বেনারস শহরের কিছু ভালো নক্সা করেছিলেন l এই নক্সায় পুকুরগুলির অবস্থান দেখানো হয়েছে l এই নক্সা ১৯৮৬তে ছাপা ‘ডায়না এল ঐক্য’-এর ইংরেজী বই ‘বেনারস সিটি অফ লাইট’-এ দেওয়া হয়েছিলো l প্রকাশক – রাউটলৈজ এন্ড কৈগনপাল, লন্ডন l
পুকুরকে নদীর সঙ্গে যুক্ত করার প্রথা অনান্য এলাকাতেও রয়েছে l এই সম্বন্ধে ভব নগরের প্রসিদ্ধ গঙ্গাজলিয়া পুকুরের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে l
আজও পুকুরগুলি খাঁটি
এধিকাংশ শহর ও যে গ্রামগুলিতে তাদের পা প্রসারিত হয়ে চলেছে সেই গ্রামগুলিও বর্তমানে পুকুরের দুর্দশার প্রবন্ধ হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে l
শ্রী রামেশ্বর মিশ্র-র সঙ্গে আমাদের যে কথাবার্তা হয়েছিলো তাঁর থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি অধ্যায়ের প্রারম্ভিক ভাগ প্রস্তুত করার জন্য l
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে তৈরী হচ্চিলো যে বান্দেলা পুকুর সে তথ্য আমরা ‘মধ্যপ্রদেশ সন্দেশ’-এর সেচ বিশেষ সংখ্যা ছাড়াও শ্রী জি এম হৈরিয়ট-এর ১৯০১-এ লেখা সেই সময়ের সেণ্ট্রাল প্রভিন্সেস-এ এক সরকারী রিপোর্টেও দেখতে পাই l রিপোর্টটিতে এ এলাকার ছোট বড় পর্যাপ্ত বিবরণ রয়েছে l গুণীজনখানা সম্পির্কিত সূচনা আমরা শ্রী নন্দকিশোর আচার্যর কাছে পেয়েছি l তাঁর ঠিকানা – সুথরো কী বড়ী গুওয়ার, বিকানের l মহীশূর রাজ্য বিষয়ে ১৯০১ সালে প্রকাশিত ‘মেমোরান্ডাম অন ইরিগেশান ওয়ার্ক্স ইন মহীশূর’ নামক এক রিপোর্ট, সরকারী বিভাগগুলির কারণে পুকুরের দুর্দশা তার ওপর সঠিক আলোকপাত করে l
‘বর্গীয় গীতমলায়’ গারিয়োদের মাঝে ফিরিঙ্গি নল মত লাগায় দিও–এই পঙক্তিগুলিতে আমাদের সমাজে বসবাসকারী স্বভাবের ইঙ্গিত পর্যন্ত নেই l এই গীতমালাতে সমস্ত শুভ সময়ের- হোলি, বিয়ে, কুয়োপুজোর মতো পরব উত্সবে গীত গাওয়া গানগুলির সংগ্রহ রয়েছে l আলীগড়ের সুশ্রী রমাদেবী বর্গীয় এই গানগুলির সংকলন করেন এবং দিল্লীর সুশ্রী ত্রিবেণী দেবী এই গীতমালা ছেপে বিলি করেন l অন্যথা এ বই বিক্রির জন্য নয় l ত্রিবেণীজীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে – ৭১৯ প্রেম গলি ১-ডি সুভাষ রোড, গান্ধীনগর দিল্লী-৩১ l অশোক প্রেস, ২৮১০, গলি মাতাওয়ালী, কিনারী বাজার, চাঁদনি চক, দিল্লী থেকে ১৯৯২-এ প্রকাশিত এই গীতমালায় প্রথম সংস্করণে এই বিয়ের গানটির উল্লখ রয়েছে l
ইন্দোর ও দেওয়াস শহরে গত কুড়ি বছরে বেড়ে চলা জলসংকটের অধিকাংশ খবরাখবর সেখানের খবর কাগজের সংবাদ ও সম্পাদকের নামে চিঠিপত্র থেকে নেওয়া হয়েছে l দেওয়াসের প্রারম্ভিক সূচনা আমরা বৃজেশ কানুনগোর কাছে পেয়েছিলাম l তাঁর ঠিকানা – ১৫১ বিজয় নগর, দেওয়াস, মধ্যপ্রদেশ l সাগর শহর ও তার আশেপাশের এলাকায় যাতাযাতের ফলে সেখানের পুকুরগুলি সম্পর্কে অনেক কিছুই দেখতে বুঝতে পারা গেছে l এছাড়াও শ্রী পঙ্কজ চতুর্বেদীর লেখা থেকেও সাহায্য পাওয়া গেছে l
মধ্যপ্রদেশের প্রায় দেড়শো শহরে ১৯৯৩ সালে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই জলসঙ্কট শুরু হয়ে গিয়েছিলো এবং প্রশাসন এই শহরগুলিতে জল বয়ে আনার পরিকল্পনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে l
আমাদের রাজধানীও জলের ব্যাপারে প্রতিদিনই গরীব প্রমানিত হয়ে চলেছে l যমুনা এবং এখন তো গঙ্গা থেকে বয়ে আনা জলও কম পড়ছে l দিল্লীর গ্রামগুলির জন্য হৈদরপুর জলকল কেন্দ্র, জলের অভাবে এপ্রিল ৯৩ পর্যন্ত শুরু করা যায়নি, সুধী পাঠকগন এটা খেয়াল করুন যে এটা সেই এলাকা, যেখানে মাত্র পঞ্চাশ ষাট বছর আগে পর্যন্তও পুকুর ও জলের কোন অভাব ছিলো না l
বইয়ের চতুর্থ সংস্করণ বেরোনো পর্যন্ত জল সংঙ্কট আরও বেড়েছে l সেই সঙ্গে সরকারী ও বেসরকারী সংস্থাগুলিতে সমস্যা সমাধানের চিন্তাও l ‘সেণ্টার ফর সায়েন্স এন্ড এনভারমেণ্ট’-এর মতো সংস্থাগুলি এখানে পুরোনো ও নতুন জল সংগ্রহ প্রণালীগুলির ওপর কাজ করছে l দিল্লীর গ্রাম্য এলাকায় উপেক্ষায় ঝড়ের পরও যে পুকুরগুলি বেঁচে গেছে সেগুলি সংস্কারের কাজও শুরু হয়েছে l
মূল বইয়ের প্রথম সংস্করণ বেরোয় ১৯৯৩ সালে এবং পঞ্চম সংস্করণ বেরোলো ২০০৪ সালে l এর মধ্যে মানুষজন জায়গায় জায়গায় পুকুর বাঁচানো এবং নতুন পুকুর তৈরীর কাজ শুরু করেছেন l এ তালিকাট খুব ছোট নয়, তাই আমরা সেটা এখানে দিতে পারলাম না l এই প্রয়াস গুলিকে আমাদের সশ্রদ্ধ নমস্কার l মনে হচ্ছে আমাদের মাথায় জমা পাঁক ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে চলেছে এবং রাজ্য ও সমাজ এটা ফিরে বুঝতে শুরু করেছেন যে আজও পুকুরগুলিই খাঁটি, আজও পুকুর আমাদের l
Path Alias
/articles/tathayasauutara
Post By: Hindi